, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ , ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


সিরাজগঞ্জে বয়স জালিয়াতি করে কলেজে চাকরি, তদন্ত কমিটি গঠন

  • আপলোড সময় : ১৪-০১-২০২৪ ০৩:৩৮:৪১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-০১-২০২৪ ০৩:৩৮:৪১ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জে বয়স জালিয়াতি করে কলেজে চাকরি, তদন্ত কমিটি গঠন
আমিরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বয়স জালিয়াতি করে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে চাকরি নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই-সঙ্গে ওই পদে নিয়োগ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী শহিদুল বুলবুল কলেজে ল্যাব সহকারী-আইসিটি পদে নিয়োগে এ ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিদ্যালয়ের জেলা প্রশাসক ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান নিয়োগ স্থগিতের নির্দেশ দিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সানোয়ার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সানোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার ম্যানেজিং কমিটির সভা শেষে ল্যাব সহকারী-আইসিটি পদে নিয়োগ স্থগিতের নির্দেশ দেন সভাপতি ও জেলা প্রশাসক। আমাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মঞ্জুর আলম ও যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বরুন কুমার সরকার। দুই দিনের মধ্যে তদন্ত করে রোববার (১৪ জানুয়ারি) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। একই সঙ্গে জেলা নির্বাচন অফিসারকেও বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে কোনাবাড়ী শহিদুল বুলবুল কলেজে গেলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। জালিয়াতির মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত এস এম জাহিদ হাসানের শাস্তি দাবি করেন তারা।

অভিযোগকারী রহমত হোসেন রানা বলেন, লিখিত পরীক্ষায় আমরা তিনজন অংশ নেই। প্রথম স্থান অধিকার করেন এস এম জাহিদ হাসান। তার বয়স জালিয়াতির তথ্যসহ লিখিত অভিযোগ ২৪ ডিসেম্বর আমি জেলা প্রশাসক বরাবর দিয়েছে। নির্বাচন অফিস থেকে ২০ ডিসেম্বর তার অনলাইন আইডি কার্ড তুলেছি। সেখানে জন্ম তারিখ রয়েছে ১৯৮৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। সার্টিফিকেটে তিনি ১৯৯৭ সালে জন্ম তারিখ দেখিয়েছেন। ইতিমধ্যে গত ১০ জানুয়ারি নির্বাচন অফিস থেকে সংশোধন করেছেন। সংশোধিত বয়সে তিনি তার ছোট ভাইয়ের থেকেও তিন বছরের ছোট। অর্থাৎ তার ছোট ভাইয়ের জন্ম তারিখ ১৯৯৪ সাল আর তার জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ১৯৯৭ সাল।

শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুস সালাম খান বলেন, এস এম জাহিদ হাসান পরীক্ষায় প্রথম হন এবং তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। এরপর অপর দুজন প্রার্থী অভিযোগ করেন। তার এনআইডিতে নিজের নাম, বাবা-মার নাম ঠিক থাকলেও জন্ম তারিখ এডিট করে আবেদনের সাথে দেওয়া হয়েছে। এনআইডি নম্বর ঠিক রেখে ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ সালে জন্ম তারিখের স্থলে ৩০ ডিসেম্বর ১৯৯৭ বসানো হয়েছে।

কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল মমিন চৌধুরী বলেন, নিজে যতটুকু কাগজপত্র দেখেছি তাতে এটা জালিয়াতি বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। আবেদনপত্রের সাথে যে এনআইডির কপি দেওয়া হয়েছে ও অনলাইনে যে এনআইডি তোলা হয়েছে সেখানে জন্ম তারিখ জালিয়াতি হয়েছে। সর্বশেষ এনআইডি গত পরশু দিন সংশোধন করেছেন। নিয়োগের পরে সংশোধন করা যায় কিনা সেটা দেখার বিষয় আছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের জালিয়াতি আমরা সমর্থন করতে পারি না। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ম্যানেজিং কমিটি যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই বাস্তবায়ন হবে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এস এম জাহিদ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেন। কিন্তু বক্তব্য জানতে চাইলে কল কেটে দেন।

জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, যে প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে তিনি বয়স জালিয়াতি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেটা ম্যানেজিং কমিটিতে যাচাই-বাছাই করে দেখে যদি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#
 
সর্বশেষ সংবাদ
শাহাবাগ-ঢাবি ক্যাম্পাসে গাড়িতে অপরিচিত মানুষ, সতর্ক অবস্থানে শিক্ষার্থীরা

শাহাবাগ-ঢাবি ক্যাম্পাসে গাড়িতে অপরিচিত মানুষ, সতর্ক অবস্থানে শিক্ষার্থীরা